বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩০ অপরাহ্ন
॥মইনুল হক মৃধা॥ পরিবারের সাথে ঈদ করতে রাজধানী ছেড়ে আসা মানুষের ভিড় গতকাল শনিবার দৌলতদিয়া ঘাটে ছিল চোখে পড়ার মতো।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী শত শত ঘরমুখি মানুষ ফেরী ও লঞ্চে নদী পাড়ি দিয়ে রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ঘাটে পৌছার পর তারা পরিবহন সংকটে বাড়তি বিড়ম্বনায় পড়ছে। তবে রাজধানীগামী কোন গাড়ি বা যাত্রীর চাপ না থাকায় এক প্রকার খালি ফেরী ছেড়ে যাচ্ছে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় জানায়, বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় মোট ২০টি ফেরী চলছে। এরমধ্যে বড় ফেরী চালু রয়েছে ১০টি। সবকটি ফেরী চালু থাকায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে তেমন কোন গাড়ি রাজধানীর দিকে ছেড়ে আসছে না। ফলে অনেকটা দৌলতদিয়া ঘাট যাত্রী ও যানবাহন শূন্য।
বিআইডব্লিউটিসি’র হিসেব মতে গত বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে গত শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় প্রায় ৩হাজার ২০০ গাড়ি দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে পার হয়েছে। অথচ গতকাল ভোর ৬টার পর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ১০ ঘন্টায় মাত্র ২০০টির মতো যানবাহন পার হয়েছে। অন্যান্য সময় এই ১০ ঘন্টায় অন্তত ১৫০০ থেকে ১৬০০ গাড়ি পার হতো। ফলে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে এক প্রকার খালি ফেরী ছেড়ে যাচ্ছে।
এদিকে গতকালও সকাল থেকে রাজধানী ছেড়ে আসা মানুষের ভিড় ছিল ফেরী ও লঞ্চে। এসব মানুষ নদী পাড়ি দিয়ে দৌলতদিয়ায় পৌছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী দূরপাল্লার গাড়ি অনেক সংকটে পড়েন। অনেক যাত্রীকে বিভিন্ন স্থানে গাছ তলায় বা পেট্রোল পাম্পের ছায়ায় বসে সময় কাটাতে দেখা যায়। অপেক্ষা করতে থাকে গাড়ির জন্য। গাজীপুর থেকে আসা মাগুরাগামী বেসরকারী কোম্পানীর এক কর্মকর্তা ইয়াকুব আলী বলেন, পাটুরিয়া ঘাটে বিশাল জ্যাম। সাভার বাইপাইল থেকে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত আসতে প্রায় ৬ ঘন্টার মতো সময় লেগেছে। অথচ ভিন্ন চিত্র দৌলতদিয়া ঘাটে। এপারে কোন গাড়ি নেই। অথচ দূরপাল্লার গাড়ি না থাকায় আরেক বিড়ম্বনায় আছি।
দৌলতদিয়া ঘাটে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কিছু পশুবাহী গাড়ি ও যাত্রীবাহি বাস পার হলেও সকাল থেকে কোন গাড়ি ও যাত্রী নেই। দৌলতদিয়া ঘাট পুরোপুরি ফাকা হয়ে পড়েছে। এরকম চিত্র সহসা দেখা মেলেনা।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি বলেন, বর্তমানে ২০টি ফেরী চলছে। সবকটি ফেরী চালু থাকায় দৌলতদিয়া ঘাটে কোন চাপ নেই। এছাড়া বড় কারণ হচ্ছে মানুষ ঈদ করতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দিকে ছুটছে। যে কারণে গাড়ির যত চাপ সব মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট এলাকায়। তবে ঈদের পর থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে চাপ পড়বে।
গতকাল ১০ই আগস্ট সকালে সরেজমিনে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা পরিদর্শন করে দেখা যায়, নদী উত্তাল হওয়ায় ও ¯্রােত থাকায় বেশীর ভাগ মানুষ লঞ্চের পরিবর্তে ফেরীতে নদী পার হচ্ছে। তবে লঞ্চেও কম যাত্রী পার হচ্ছে না। এছাড়া দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে স্পীড বোট চালু হয়েছে। তারা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রী পারাপার করছে।
ঈদের ঘরমুখী যাত্রীদের প্রচন্ড ভিড়ের সুযোগে বাস ও মাহেদ্রতে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে। বাসে দৌলতদিয়া থেকে কুষ্টিয়ার ভাড়া নেয়া হচ্ছে ২০০ টাকা করে, যা স্বাভাবিক সময়ে ৭০ টাকা। মাহেন্দ্রতে দৌলতদিয়া থেকে গোয়ালন্দ মোড় পর্যন্ত ২০ টাকার ভাড়া নেয়া হচ্ছে ১০০ টাকা করে।
Leave a Reply